বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি মহামারী আকার ধারন করছে ধর্ষন নামক এক কঠিন ব্যধি। টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অন লাইন মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়াই প্রতিনিয়তই হেড লাইন হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে ধর্ষনের খবর। যে ধর্ষনের কবলে পড়ছে ১বছরের শিশু থেকে শুরু করে ১০০ বছরের বৃদ্ধা।
যারা ধর্ষনকারী তাদের আবার আনা হচ্ছে আইনের আওতায়- নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। তার পরে ও কি কমেছে ধর্ষনের মতো নোংরা কাজটি। যদি দেশের সাধারন জনগনের নিকট জানতে চাওয়া হয়- এক বাক্যে উত্তর আসবে না। তাহলে কেন কমছে না ধর্ষনের মতো সবচেয়ে জঘন্ন কাজটি।
যারা ধর্ষনকারী তারা কি কখনো ভেবে দেখে না- তাদের ঘরেও মা, বোন, স্ত্রী,কন্যা আছে। এদের মা, বোন, স্ত্রী অথবা কন্যা কে কেউ যদি জোড় করে ধর্ষন করে তাহলে তাদের কেমন লাগবে।
আমার মনে হয় বর্তমান সময়ে আমি, আপনি বা আমরা সকলেই ভয়ে থাকি আমাদের মা,বোন,স্ত্রী এবং কন্যাদের নিয়ে। কখন কে কোথায় ধর্ষিত হয়। শুধুই কি ধর্ষিত হয়? না! ধর্ষক নামক নরপিচাষরা ধর্ষন করার পরে ভিকটিম কে চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়- যাতে করে কোন সাক্ষী না থাকে। তবে এটা সত্য পাপ কোন দিন বাপ কেও ছাড়েনি। যে ভাবেই পাপ কে ঢেকে রাখার চেষ্টা করুক না কেন তা কোন না কোন ভাবে প্রকাশিত হবেই হবে।
বর্তমান সময়ে যতগুলি ধর্ষনের ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে চোখে পড়েছে- তার বেশির ভাগ গুলোর সাথে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের লোক, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আছে। কোন এক সময় আমরা পিতা মাতার পরেই শিক্ষককেই বেশি সম্মান করতাম। ছেলে মেয়েদের নিরাপদে রাখতে শিক্ষকের উপর আমরা ভরসা রাখতাম। সেই মানুষ গড়ার কারিগর যদি হয় ধর্ষক তাহলে জাতী হিসেবে আমাদের অবস্থান কোথায় তা বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগনকে ভাবিয়ে তুলেছে। আবার ধর্ষিতা পুলিশের নিকট ধর্ষকের বিচার চাইতে গিয়ে যদি পুনরায় ধর্ষন অথবা শিলতাহানীর শিকার হয় তাহলে হতবাক হওয়া ছাড়া আর কি করার থাকে - প্রিয় পাঠক আপনার বিবেক দিয়ে ভেবে দেখুন।
আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের কতটুকু অবক্ষয় হলে ধর্ষনের মতো এমন নোংরা কাজ করতে পারে- তা আপনার, আমার সকলেরই জানা। জানি না এর শেষ কোথায়। তবে আমার মনে হয় আমরা নীতি ও নৈতিকতা থেকে অনেক দূরে চলে এসেছি। বর্তমান সময়ে দেশে সু শাসনের অভাব, ন্যায় বিচারের অভাব আছে বলেই এমন নোংরামী কাজ করতে কেউ ভয় পাচ্ছে না। ধরুন আমি কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি- প্রতিষ্ঠানের মালিক আমাকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। আমি আমার অধীনস্থ কর্মচারীদের অন্যায় কাজ করাতে বাধ্য করছি। কোন এক সময় দেখা যাবে ঐ সব কর্মচারী আমার অগোচরে অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে। আমি তাদের শাসন করতে পারবো না- কারন আমি তো নিজেই তাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করিয়েছি। আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি আশা করি সম্মানিত পাঠক মহল বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়।
এ সব ধর্ষক নামক নরপিচাষদের হাত থেকে প্রথমে আমাদের সাহায্য চেতে হবে মহান রাব্বুলা আলামিন আল্লাহর নিকট। পাশাপাশি আসুন আমরা সকলে মিলে সজাগ থাকি এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুক। আমিন।
0 মন্তব্য